ময়মনসিংহ, মুক্তাগাছার বিখ্যাত মন্ডা
ময়মনসিংহ শহর থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরে মুক্তাগাছা। প্রায় ২০০ বছর আগের কথা। গোপাল পাল নামে এক ব্যক্তি স্বপ্নে দেখা পান এক সন্ন্যাসীর। তার কাছ থেকে তিনি পেয়েছিলেন এক রকম মিষ্টি তৈরির প্রণালি। নাম ‘মণ্ডা’। তিনি মিষ্টি তৈরিকে ব্যবসা হিসেবে গ্রহণ করলেন। উত্তরসূরিরাও ধরলেন পূর্বপুরুষের ব্যবসার হাল। চ্যাপ্টা আকৃতির মণ্ডা ছানা ও চিনির রসায়নে প্রস্তুতকৃত এক ধরনের সন্দেশ। আজো মুক্তাগাছায় গেলে স্বাদ পাওয়া যেতে পারে এর। এ মণ্ডার প্রস্তুত প্রণালি কখনই পরিবারের বাইরে যায়নি। এমনকি যেখানে এটি তৈরি হয়, তার চৌকাঠ বাড়ির নারীদের পার হওয়াও বারণ। পূর্বপুরুষদের আদেশ মেনেই নাকি এ রীতি!
******
বিস্তারিত ##$$
উপমহাদেশে এমন কিছু উল্লেখযোগ্য দুধের তৈরি মিষ্টি আছে যার কারণে একটি দেশ এবং দেশের ঐ অঞ্চল বিখ্যাত।
যেমন ভারতের দিল্লির লাড্ডু , আলমোড়ার বালামিঠাই , লাল মোহন, রাজভোগ রয়্যাল, অমৃতকুম্ভ, রসমালঞ্চ , ছানার টোস্ট , পাকিস্তানের সোনা মিয়ার মিষ্টি , গোলাপজামুন , নেপাল ও শ্রীলংকার গোলাপ জাম ও লাল মোহন উল্লেখযোগ্য । তেমনি বাংলাদেশের সঙ্গে মিশে আছে মুক্তাগাছার গোপাল পালের মন্ডা , কুমিল্লার রসমালাই, পোড়াবাড়ির চমচম, বগুড়ার দই, নাটোরের কাঁচাগোল্লা নেত্রকোনার বালিশ। মুক্তাগাছার মন্ডার নাম শোনেননি ভোজনরসিকদের মাঝে এমন লোক খুঁজে পাওয়া দুষ্কর ।
মন্ডা নিয়ে একটি কিংবদন্তি রয়েছে । দুই শতাধিক বছর আগে মুক্তাগাছার প্রসিদ্ধ মন্ডার জনক গোপাল পাল এক রাতে স্বপ্নাদিষ্ট হলেন । শিয়রে দাঁড়িয়ে এক ঋষি তাকে আদেশ দিচ্ছেন মন্ডা মিষ্টি তৈরি কর । পরদির গোপাল ঋষির আদেশে চুল্লি খনন শুরু করলেন । দৈবাৎ উদয় হলেন সাধু । তিনি হাত বুলিয়ে দিলেন চুল্লিতে । শিখিয়ে দিলেন মন্ডা তৈরির কলাকৌশল গোপালকে । দুধ ও চিনি দিয়ে তৈরি হলো মন্ডা । গোপাল তার নব উদ্ভাবিত মন্ডা পরিবেশন করলেন তৎকালীন মুক্তাগাছার জমিদার মহারাজা সূর্যকান্ত আচার্য চৌধুরীর রাজদরবারে ।
মন্ডা খেয়ে মহারাজা পেলেন পরম তৃপ্তি , আর বাহবা দিলেন গোপালকে । শুরু হলো মন্ডার যাত্রা । গোপাল সম্বন্ধে জানা যায়, বাংলা ১২০৬ সালে তৎকালীন ভারতবর্ষের মুর্শিদাবাদে জন্মগ্রহণ করেন । নবাব সিরাজদৌলার মৃত্যুর পর গোপাল মাতৃভূমি রাজশাহীতে চলে আসেন । পরে বাংলা ১২৩০ সালে তিনি মুক্তাগাছায় বসত গড়েন । প্রথম মন্ডা তৈরি হয় বাংলা ১২৩১ সালে ।
মন্ডার মূল উপাদান দুধ ও চিনি । বর্তমানে ২০টির এক কেজি মন্ডা ৪০০ টাকা দরে বিক্রি হয় । মন্ডা তৈরির পর ফ্রিজে সংরক্ষণ করা হয় না । স্বাভাবিক তাপমাত্রায় গরমের সময় ৩/৪ দিন ও শীতকালে ১০/১২ দিন ভালো থাকে ।
পাকিস্তানের ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খান, ভারতের পশ্চিম বঙ্গের সাবেক মূখ্যমন্ত্রী ডাঃ বিধান কৃষ্ণ রায় , উপমহাদেশের প্রখ্যাত সারোদ বাদক ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ মন্ডা খেয়ে উচ্ছসিত প্রশংসা করেছেন । উল্লেখ্য যে, ময়মনসিংহ শহরে ও মুক্তাগাছার বেশ কিছু দোকানে মন্ডা বিক্রি হয় । যা আসল মন্ডা নয় । আসল মন্ডা গোপাল পালের আদি মন্ডা হিসাবে পরিচিত যার কোন শাখা নেই।
আহ! মুক্তাগাছার মণ্ডা
ময়মনসিংহ বেশ কিছু কারণেই বিখ্যাত হয়ে আছে।এ জেলায় জন্মেছেন বেশকিছু বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গ।যেমনঃ আনন্দমোহন বসু,তিনি ছিলেন বাঙালি রাজনীতিবিদ এবং সমাজসেবক।সৈয়দ নজরুল ইসলাম,তিনি ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি।অধ্যাপক ড. আনোয়ারুর রহমান খান,তিনি এ.আর খান নামেই বেশি পরিচিত। তিনি বাংলাদেশের অন্যতম পথিকৃৎ ও বিশিষ্ট জ্যোতির্বিজ্ঞানী।যতীন সরকার,
তিনি অসাধারণ বাগ্মীতার জন্য জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। ২০১০ খ্রিস্টাব্দে তাঁকে স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার প্রদান করা হয়।
হেমেন্দ্রমোহন বসু,তিনি বিংশ শতাব্দীর শুরুতে বিস্ময়কর যান্ত্রিক প্রগতির বিভিন্ন নিদর্শনকে এদেশ প্রবর্তন করেন। আব্দুল জব্বার,
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের শহিদ।আবুল মনসুর আহমেদ,তিনি বাংলাদেশী সাহিত্যিক, রাজনীতিবিদ এবং সাংবাদিক।
আবুল কাসেম ফজলুল হক,বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত প্রাবন্ধিক ও রাষ্ট্রচিন্তাবিদ।গোলাম সামদানী কোরায়শী,।বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট সাহিত্যিক, গবেষক ও অনুবাদক।এছাড়াও ময়মনসিংহ জেলা মৈমনসিংহ গীতিকা,মহুয়া, মলুয়া, দেওয়ানা মদীনা, চন্দ্রাবতী, কবিকঙ্ক, এর জন্য বিখ্যাত।
তার মধ্যে ময়মনসিংহের মুক্তা-গাছার মন্ডা একটি বিখ্যাত খাবার।
******
বিস্তারিত ##$$
উপমহাদেশে এমন কিছু উল্লেখযোগ্য দুধের তৈরি মিষ্টি আছে যার কারণে একটি দেশ এবং দেশের ঐ অঞ্চল বিখ্যাত।
যেমন ভারতের দিল্লির লাড্ডু , আলমোড়ার বালামিঠাই , লাল মোহন, রাজভোগ রয়্যাল, অমৃতকুম্ভ, রসমালঞ্চ , ছানার টোস্ট , পাকিস্তানের সোনা মিয়ার মিষ্টি , গোলাপজামুন , নেপাল ও শ্রীলংকার গোলাপ জাম ও লাল মোহন উল্লেখযোগ্য । তেমনি বাংলাদেশের সঙ্গে মিশে আছে মুক্তাগাছার গোপাল পালের মন্ডা , কুমিল্লার রসমালাই, পোড়াবাড়ির চমচম, বগুড়ার দই, নাটোরের কাঁচাগোল্লা নেত্রকোনার বালিশ। মুক্তাগাছার মন্ডার নাম শোনেননি ভোজনরসিকদের মাঝে এমন লোক খুঁজে পাওয়া দুষ্কর ।
মন্ডা নিয়ে একটি কিংবদন্তি রয়েছে । দুই শতাধিক বছর আগে মুক্তাগাছার প্রসিদ্ধ মন্ডার জনক গোপাল পাল এক রাতে স্বপ্নাদিষ্ট হলেন । শিয়রে দাঁড়িয়ে এক ঋষি তাকে আদেশ দিচ্ছেন মন্ডা মিষ্টি তৈরি কর । পরদির গোপাল ঋষির আদেশে চুল্লি খনন শুরু করলেন । দৈবাৎ উদয় হলেন সাধু । তিনি হাত বুলিয়ে দিলেন চুল্লিতে । শিখিয়ে দিলেন মন্ডা তৈরির কলাকৌশল গোপালকে । দুধ ও চিনি দিয়ে তৈরি হলো মন্ডা । গোপাল তার নব উদ্ভাবিত মন্ডা পরিবেশন করলেন তৎকালীন মুক্তাগাছার জমিদার মহারাজা সূর্যকান্ত আচার্য চৌধুরীর রাজদরবারে ।
মন্ডা খেয়ে মহারাজা পেলেন পরম তৃপ্তি , আর বাহবা দিলেন গোপালকে । শুরু হলো মন্ডার যাত্রা । গোপাল সম্বন্ধে জানা যায়, বাংলা ১২০৬ সালে তৎকালীন ভারতবর্ষের মুর্শিদাবাদে জন্মগ্রহণ করেন । নবাব সিরাজদৌলার মৃত্যুর পর গোপাল মাতৃভূমি রাজশাহীতে চলে আসেন । পরে বাংলা ১২৩০ সালে তিনি মুক্তাগাছায় বসত গড়েন । প্রথম মন্ডা তৈরি হয় বাংলা ১২৩১ সালে ।
মন্ডার মূল উপাদান দুধ ও চিনি । বর্তমানে ২০টির এক কেজি মন্ডা ৪০০ টাকা দরে বিক্রি হয় । মন্ডা তৈরির পর ফ্রিজে সংরক্ষণ করা হয় না । স্বাভাবিক তাপমাত্রায় গরমের সময় ৩/৪ দিন ও শীতকালে ১০/১২ দিন ভালো থাকে ।
পাকিস্তানের ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খান, ভারতের পশ্চিম বঙ্গের সাবেক মূখ্যমন্ত্রী ডাঃ বিধান কৃষ্ণ রায় , উপমহাদেশের প্রখ্যাত সারোদ বাদক ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ মন্ডা খেয়ে উচ্ছসিত প্রশংসা করেছেন । উল্লেখ্য যে, ময়মনসিংহ শহরে ও মুক্তাগাছার বেশ কিছু দোকানে মন্ডা বিক্রি হয় । যা আসল মন্ডা নয় । আসল মন্ডা গোপাল পালের আদি মন্ডা হিসাবে পরিচিত যার কোন শাখা নেই।
আহ! মুক্তাগাছার মণ্ডা
ময়মনসিংহ বেশ কিছু কারণেই বিখ্যাত হয়ে আছে।এ জেলায় জন্মেছেন বেশকিছু বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গ।যেমনঃ আনন্দমোহন বসু,তিনি ছিলেন বাঙালি রাজনীতিবিদ এবং সমাজসেবক।সৈয়দ নজরুল ইসলাম,তিনি ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি।অধ্যাপক ড. আনোয়ারুর রহমান খান,তিনি এ.আর খান নামেই বেশি পরিচিত। তিনি বাংলাদেশের অন্যতম পথিকৃৎ ও বিশিষ্ট জ্যোতির্বিজ্ঞানী।যতীন সরকার,
তিনি অসাধারণ বাগ্মীতার জন্য জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। ২০১০ খ্রিস্টাব্দে তাঁকে স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার প্রদান করা হয়।
হেমেন্দ্রমোহন বসু,তিনি বিংশ শতাব্দীর শুরুতে বিস্ময়কর যান্ত্রিক প্রগতির বিভিন্ন নিদর্শনকে এদেশ প্রবর্তন করেন। আব্দুল জব্বার,
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের শহিদ।আবুল মনসুর আহমেদ,তিনি বাংলাদেশী সাহিত্যিক, রাজনীতিবিদ এবং সাংবাদিক।
আবুল কাসেম ফজলুল হক,বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত প্রাবন্ধিক ও রাষ্ট্রচিন্তাবিদ।গোলাম সামদানী কোরায়শী,।বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট সাহিত্যিক, গবেষক ও অনুবাদক।এছাড়াও ময়মনসিংহ জেলা মৈমনসিংহ গীতিকা,মহুয়া, মলুয়া, দেওয়ানা মদীনা, চন্দ্রাবতী, কবিকঙ্ক, এর জন্য বিখ্যাত।
তার মধ্যে ময়মনসিংহের মুক্তা-গাছার মন্ডা একটি বিখ্যাত খাবার।
No comments